Tuesday, January 31, 2012

কামাল মজুমদারের যৌন লিপ্সা এবং সাংবাদিক নির্যাতনের আরও অজানা কাহিনী।

অতি সম্প্রতি মিরপুরের এমপি কামাল মজুমদারের সাংবাদিক নির্যাতনের সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ায় অনেকে জানতে পারছেন লোকটি কেমন নিকৃষ্ট। কিন্তু কেউ কি ভাবতে পারছেন তার নিজের একটি টেলিভিশন আছে সেখানকার সাংবাদিকরা কেমন আছে। কেউ কি সে খবর রাখেন! আপনারা কেউ ভাবতেও পারবেন না- কি অমানুষিক মানসিক নির্যাতন সে তার মোহনা টিভির সাংবাদিকদের দিয়ে এসেছে এবং আসছে। মোহনায় প্রায় প্রথম থেকে কাজ করেছেন এমন একজন নিউজ এডিটর এবং কয়েকজন সংবাদ কর্মীর কাছ থেকে শুনলাম সেসব কাহিনী।

বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর কামাল মজুমদার এই টিভির লাইসেন্স পান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নাকি তাকে ছোট ভাইয়ের মত দেখেন- কামাল মজুমদারের নিজের দাবি, যদিও বয়সে সে শেখ হাসিনার বড় হবে। সন্ত্রাসী কামাল মজুমদারের দাবি, "নেত্রী আমারে একদিন কইলো, এই কামাল তুই একটা টিভি নে।অনেক মিডিয়া আছে কিন্তু আমার নিজের মিডিয়া নাই। সেখানেই আমি সাদা কাগজে আবেদন করলাম। পেয়ে গেলাম টিভি। এটা আমার না শেখ হাসিনার টিভি।"

লাইসেন্স পাওয়ার পর কামাল মজুমদার যুদ্ধপরাধী সালাউদ্দিন কাদেরে সঙ্গে বৈঠক করেন এবং বন্ধ হয়ে যাওয়া সিএসবি টিভির অব্যহৃত মালামাল অল্প টাকায় কিনে নেন এবং নতুন লাইসেন্স পাওয়া টিভির কাতারে সবার আগে যাত্রা শুরু করেন।

প্রথমে রবীন সিদ্দিকী নামের এক লোক তার এখানে কাজ শুরু করেন, পরে তাকে এক রকম হুমিক দিয়ে বের করে দেন কামাল মজুমদার। তার অনেক টাকাও মেরে দেন কামাল মজুমদার। কথা ছিল তাকে ডিরেক্টর করবেন কিন্তু দেননি। বাইরের কয়েকজন ডিরেক্টর নিয়োগ দিয়ে তাদের টাকা নিয়ে তাদেরকেও একে একে বের করে দেন। এখন তাদেরকে টিভি ভবনে প্রবেশ করতে দেন না এবং টাকা চাইলে জানে মেরে ফেলার হুমকি দেন। ওরা অপেক্ষা করছে সুদিনের, কামালের পেছনে আবারো ডিম ডুকানোর কর্মসূচির দিনের অপেক্ষায়।

কামাল মজুমদারের এক জামাতা সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তা। সে হুমকি সাংবাদিক এবং ওইসব ডিরেক্টরদের দিয়ে সে বলে আসছে যে, কেউ যদি তার অকর্মের কথা ফাঁস করে দেয় তাহলে তার বিরুদ্ধে অন্য রকম ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদিও তার মেয়ের জামাতাকে কখনো ওই টিভির আশে পাশে দেখা যায়নি।

সাংবাদিক হিসেবে এক সময় ইত্তেফাকে কাজ করতেন আকরাম হোসেন। তাকে কামাল মজুমদার মোহনার সংবাদ বিভাগের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেন। তার সঙ্গে নিয়োগ পান সাদ বিন রাবী নামের আরেকজন সাংবাদিক, বর্তমানে আছেন ইসলামী টিভিতে। কামাল মজুমদার তাদের দুজনকে অনেক অনেক অপমান করে বিদায় করেন। শোনা যায়, সাদ বিন রাবীকে সে জুতা দিয়ে পেটান। বেচারা ইজ্জতের ভয়ে কাউকে সে অভিযোগ করতে পারেননি। আমিরুল ফয়সাল নামের আরেকজন সাংবাদিককেও সে পিটিয়ে বের করে দেন।

এরপর সেখানে সংবাদ বিভাগের প্রধান হিসেবে নিয়োগ পান মারুফ উদ-দৌলা নামের একজন সাংবাদিক, সঙ্গে দেলোয়ার হোসেন নামের আরেকজন। কামাল মজুমদার এদের মধ্যে মারুফকে অনেক অপমান করে বের করে দেন এবং তার পাওয়া টাকাও বুঝে দেন নি। এরপর সেখানে নিযোগ পান সেলিম খান এবং মুন্নী সাহার ভাই প্রনব সাহা। শোনা যাচ্ছে মুন্নী সাহার ভাই কামাল মজুমদারের বর্তমান প্রধান পরামর্শ দাতা।সংবাদের সঙ্গে এই লোকের কোনও সম্পর্ক না থাকলেও মুন্নীর দোহাইতে সে ছড়ি গোরাচ্ছে মোহনায়। তাকে বের করে দেওয়ার চাপ আসলে যারা তাকে বের করে দিতে চেয়েছে তাদেরকে উল্টা অন্যায়ভাবে বের করে দেয় কামাল মজুমদার--অনেক অপমান করে। কামাল মজুমদার অনেক সময় তার সাংবাদিকদের বলেন এটিএন বাংলার মুন্নী সাহা নাকি তার কেনা। প্রমাণ হিসেবে মোহনায় টানানো একটি ছবি দেখান-- যেখানে মুন্নীসাহাকে দেখা যাচ্ছে সন্ত্রাসী কামাল মজুমদারের কোনও এক অনুষ্ঠানে চামাচামী করতে।

অন্যদিকে মোহনা টিভির অনুষ্ঠান এবং প্রশাসন বিভাগেও একের পর বিশিশ্ট ব্যাক্তিরা কাজ করেছেন।অপমান নিয়ে বিদায় হয়েছেন। প্রথমে বিখ্যাত পরিচালক সৈয়দ সালাউদ্দিন জাকী তার সিইও হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু তাকে চরিত্র হরণ করে কামাল মজুমদার বিদায় করে দেন। সিইও হিসেবে এরপর আলী ইমাম যোগ দেন কয়েক মাস পর তাকেও অপমান করে বিদায় করে দেন কামাল মজুমদার, এমনকি দারোয়ানকে নির্দেশ দেন যাতে তিনি উপরে না যেতে পারেন। টিভি ব্যাক্তিত্ব আলী ইমাম অফিসে এসে এই পরিস্থিতির শিকার হয়ে না প্রবেশ করতে না পেরে চলে যান।তার প্রতিষ্ঠানে কয়েকদিনের জন্য সিইও হিসেবে কাজ করেন আরেক খ্যাতনাম সাংবাদিক আনিস আলমগীর। কিন্তু পরিস্থিতি আর পরিবেশ অনুকুলে না থাকায় তিনিও চলে যেতে বাধ্য হন।

সেখানে অনুষ্ঠান প্রধান হিসেবে হাসিনা আহমেদ সোমা, আহমেদ শরীফ, আরমানসহ অনেক বিশিষ্ট ব্যাক্তি কাজ করেন-- কিন্তু সবাইকে কামাল মজুমদার অত্যন্ত অপমানের সঙ্গে বিদায় করেন। অনেককে তাদের পাওনা বেতনও নিতে পারেননি। অনেকে সম্মানিত লোককে অসন্মান করতে করতে কামাল মজুমদার এমন বিশ্বাস পেয়েছেন যে, তার মনে হয়েছে যে, সাংবাদিকদের যা ইচ্ছা করা যায়। সে কারণে আরটিভির ৩ সাংবাদিককে সে পেটানোর সাহস পেয়েছে। অপর্ণা সিংহের মতো একজন নারী সাংবাদিকের গায়ে হাত দিয়েছে তার হাত মচকিয়ে দেয়েছে, টিভি মাইক্রোফোন ফেলে দিয়েছে। সে একবারও ভাবেনি, যাদের সে তার টিভিতে এনে অপমান করেছে তারা দ্বিতীয়বার অপমান না হতেই তার বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ করেনি প্রকাশ্যে। তাদের সবার মান সন্মান কামাল মজুমদারের মতো একজন সন্ত্রাসী, ছোট লোকের ছেলের চেয়ে বেশী।

কামাল মজুমদাদের একটা কৌশল ছিল মানুষকে চরিত্র হরণ করা। কিন্তু জানা গেছে এই লম্পটটের হাতে অতীতে যেমন অনেক নারী ধর্ষিত হয়েছে, পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে- গারমেন্টস কর্মী থেকে অভিনেত্রীরা তার হাতে ইজ্জত বাচাতে পারেনি, তেমনি এখনও সে অনেক নারী সাংবাদিকের চরিত্র হরণ করেছে বা করতে চেয়েছে। তার কারণে অনেক সংবাদ পাঠিকা সেখানে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। সংবাদ পাঠিকাদের শিডিউল সংবাদ বিভাগের লোকদের দেখার কথা থাকলেও সে নিজেই তা দেখতো এবং এখনো দেখে। সে সুযোগ নিত। কুপ্রস্তাব দিতো। দেয়। সকাল ৯টা থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত সে টিভি ভবনে থাকে। যাকে যখন তার রুমে ডেকে নেয়।

অত্যন্ত লজ্জার বিষয় যে, একজন সংবাদ পাঠিকা তরুনীকে কব্জা করতে গিয়ে জুতার বাড়ি খেয়েছে কামাল মজুমদার। অপমানের শিকার হয়ে কামাল মজুমদার মামলা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য তার বড় ছেলেকে বিয়ে দিয়ে সে সংবাদ পাঠিকাকে গত মে মাসে তার পত্র্রুবধু করে। তার ছেলে এই বিয়েতে রাজী না থাকলেও সে নিজেই প্রচার করে যে, ছেলে মেয়ে প্রেম করে বিয়ে করছে। আসলে ছেলে প্রেম করতো অন্যখানে- সে কারণে সে ড্রাগ নেওয়া শুরু করে। তার ওই গুণধর পুত্র দেশে এক লোককে হত্যা করে অনেক দিন বিদেশে পালিয়ে থাকলেও শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এলে দেশে ফিরে আসে।

মনিপুর স্কুলের কাহিনী পুরোটাই সত্য। ওই স্কুলকে কামাল মজুমদার তার নিজের সম্পত্তি মনে করছেন। সেখানকার হেড মাস্টার তার চামচা এবং মোহনায় তৃতীয় শ্রেণীর একটি টক শো করে ফরহাদ নামের ওই ব্যক্তি। বিষয়টি আসলে পরসম্পরের পিট চুলকানি। চোরে চোরে সহযোগিতা। অবৈধভাবে টাকা ভাগাভাগি, ভর্তি বাণিজ্য। কামাল মজুমদার সর্বশেষ যে কথাটি বলে-- তার বিরুদ্ধে মণিপুর স্কুল নিয়ে একটা কুচক্রি মহল ষডযন্ত্র করছে। ওরা জামাতি- মণিপুর স্কুলের ৭০ ভাগ শিক্ষক জামাতি। নিজেকে রক্ষা করার জন্য এই হারামি জামাতকে দোষারোপ করে "জামাতি ষড়যন্ত্র" বিষয়টিকে ভোতা করে দিতে চাচ্ছে।

আজ জানলাম, কামাল মজুমদার-এর মার পিট বাইরে নয়, ঘরেও বিস্তর। সে তার বউকে প্যান্টের বেল্ট দিয়ে নিয়মিত পিটে। অকথ্য গালাগালি করে। তার এই আচরণ বনানীনে তার আশে-পাশের বাড়ির সবাই জানে। ইদানিং নাকি হাওয়া একটু উল্টে যাচ্ছে। তার বউ উল্টা তাকে পিটায়। সে কারণে প্রায় সারা দিন সে ঘরের বাইরে কাটায়--অন্যদের সঙ্গে ঘেউ ঘেউ, খেট খেট করে।

অজানা কাহিনীর শেষ নেই-------এসব সন্ত্রাসী, কুখ্যাতরা আর কতদিন জন সেবার নামে জনগণের ঘাড়ে উঠে থাকবেন আল্লাহ জানে!

[বি: দ্র: এই পোষ্ট নিয়ে কারো সন্দেহ হলে, কোনো গোয়েন্দার গোয়েন্দা গিরি করতে হলে সত্যতা জানার জন্য যাদেরকে কামাল মজুমদার অপমান করে বিদায় দিয়েছেন তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। সোর্স থাকলে যারা এখনো কাজ করছে তাদের সঙ্গেও কথা বলতে পারেন কিন্তু আমি নিশ্চিত, প্রাণ ভয়ে তারা কেউ কথা বলতে নাও পারে।]


নৃত্যশিল্পীকে ধর্ষণচেষ্টা: ছাত্রলীগের সেই দুই নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র

কলেজছাত্রী এক নৃত্যশিল্পীকে শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রতন শেখ গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে জেলার মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ৪ জানুয়ারি রাতে স্বামীকে নিয়ে সাতক্ষীরা শিল্পকলা একাডেমীতে যান খুলনার ওই নৃত্যশিল্পী। অনুষ্ঠান শেষে রাত সাড়ে ১২টার দিকে মদ্যপ অবস্থায় টাকা পরিশোধ করার নামে তাঁদের শহরের কাটিয়ায় জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হুদা পলাশের ভাড়া বাসায় (আবদুল মাজেদের বাড়ি) নিয়ে যান জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ জুয়েল হাসান। স্বামীকে পিটিয়ে ঘর থেকে বের করে দিয়ে ওই দুই নেতা নৃত্যশিল্পীকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় নৃত্যশিল্পী বাদী হয়ে সদর থানায় নারী-শিশু নির্যাতন দমন আইনে ওই দুই ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরের দিন শহরের পোস্ট অফিস মোড় থেকে পুলিশ নাজমুল হুদাকে গ্রেপ্তার করে। অভিযোগপত্রে ১৭ জন সাক্ষীর জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। ছাত্রলীগের সভাপতি জুয়েল হাসানকে পলাতক দেখানো হয়েছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার পরিদর্শক রতন শেখ বলেন, ২৫ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।

৫ জানুয়ারি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি শেখ জুয়েল হাসান ও নাজমুল হুদাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার এবং সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে। এ ছাড়া তাঁদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যও সুপারিশ করা হয়।

Monday, January 30, 2012

বাংলাদেশে ব্যর্থ অভ্যুত্থান নাকি ষড়যন্ত্র? : কূলদীপ নায়ার

সম্প্রতি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সরকার পতনের জন্য সেনাবাহিনীর ভেতরে এক ব্যর্থ অভ্যুত্থান চেষ্টা হয়। এই অপচেষ্টা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রকাঠামোর বিরুদ্ধে আবারও এক আঘাত। ব্যর্থ অভ্যুত্থান চেষ্টা, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যরে প্রভাবশালী গালফ নিউজ পত্রিকায় খ্যাতমিান ভারতীয় কলামিস্ট, সাবেক রাষ্ট্রদূত কূলদীপ নায়ার একটি মন্তব্য প্রতবিদেন  লিখেছেন ।

কূলদীপ নায়ারের দৃষ্টিতে বাংলাদেশের এই ব্যর্থ অভ্যুত্থান চেষ্টার পেছনে আছে কিছু গোড়া উগ্রপন্থী এবং সাবেক সেনাসদস্যের হাত। আর এদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন ভারতের মাটিতে জন্ম নেওয়া স্বশস্ত্র সংগঠন উলফা এবং নাগা বিদ্রোহীরা।

বাংলাদেশের এই্ অবস্থায় ভারত সরকারের উচিত বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ানো। একই সঙ্গে অতিসত্ত্বর এমন কিছু পদক্ষেপ নেওয়া যাতে বাংলাদেশ বুঝতে পারে ভারত তার এবং তার মানুষের পাশে আছে বলেও মনে করেন নায়ার।

তার ভাষায়, ‘বাংলাদেশের হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে সেনাবাহিণীর মধ্যে যে একটা অভ্যুত্থান চেষ্টা বা ষড়যন্ত্র হচ্ছে এ সম্পর্কে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ঢাকাকে আগেই সতর্ক করে দেয়। যেমন দিয়েছিলো ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবারের ১৫ জন সদস্য সেনাবাহিনীর কিছু সদস্যের হাতে নির্মমভাবে নিহত হওয়ার আগ।ে কিন্তু তখন ঢাকার উচ্চপদস্থরা নিজেরাই ওই ক্যু এর মধ্যে ছিল। যার কারণে তারা এ সম্পর্কে কিছুই করেনি। এর ফলে যা হবার তাই হয়েছিল।

বাংলাদেশের সেনাবাহিনী যে দেশের ক্ষমতা দখলে আগ্রহী নয় তা পরিস্কার হয় ২০০৮ সালে, যখন তারা বেসামরিক কর্তৃপক্ষের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দেয় এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হতে দেয়। যার কারণে শেখ হাসিনা তিন-চতুর্থাংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সংসদে আসেন। নির্বাচনের আগে সেনাবাহিনী সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার যখন দশেরে বভিন্নি ক্ষত্রেরে জঞ্জাল সাফ সুতরোর কাজে নেমেছিল তখন দেখা যায় শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ এবং খালেদা জিয়ার বিএনপি’র অনেক নেতৃস্থানীয় রাজনীতিকই দুর্নীতিগ্রস্থ। এমতাবস্থায় সেনাবাহিনীর মধ্যে অনেকেই উদ্বিগ্ন ছিলেন এই ভেবে যে রাজনৈতিক এই পটপরিবর্তনের ফলে আবারও সেই আগের অবস্থাই ফিরে আসবে। যদিও সেনাবাহিনী বেসামরিক শাসককেই ক্ষমতার জন্য পছন্দ করেছিল।

ভোটাররা যা চেয়েছিল তা তারা পাচ্ছে না এবং প্রশাসনের কাছ থেকেও সকল ক্ষেত্রে সাড়া পাচ্ছে না। দুর্নীতি এবং স্বজনপ্রীতি পিঠাপিঠি অবস্থান করছে। যদিও মানুষ এই মন্দলোকদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। সেনাবাহিনী এখানে কিছুই করতে পারছে না কারণ গণতন্ত্র এবং স্বৈরাচারের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে।

‘প্রবাসী কিছু বাংলাদেশির প্ররোচনায় সেনাবাহিনীর সাবেক এবং বর্তমান কিছু মধ্যম সারির গোড়া উগ্রপন্থী সেনাসদস্য এক প্রকার বিশৃঙ্খলার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাতের চেষ্টা চালায়।’ সেনাবাহিনী এই চেষ্টা ব্যর্থ করে দেয় বলে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়।

খোলাচোখে এটি গোড়া উগ্রপন্থী  এবং কিছু ক্ষুব্ধ সেনা সদস্যের কাজ। গোড়া উগ্রপন্থীরা এই সরকারের প্রতি খুশি নয় কারণ হাসিনা সরকার অনেক বেশি উদারনৈতিক এবং সেক্যুলার। অন্যদিকে আরও একটা শক্তি আছে যাদেরকে ভারত সরকার কোনঠাসা করার সকল চেষ্টাই করছে।

বাংলাদেশের সেনাবাহিনীতে ইসলাম পন্থীরা প্রবেশ করেছে বলে শেখ হাসিনা ইতোমধ্যেই জানিয়েছেন।  এটা এক প্রকার অশুভ লক্ষণ কারণ পাকিস্তানেও একই ঘটনা ঘটেছে।

আমার কাছে তথ্য আছে, এই অভ্যুত্থান চেষ্টার নেতারা ভারতের প্রতিক্রিয়াশীলদের সহায়তা পেয়েছিল। ঊলফার একটি গ্রুপের পাশাপাশি মনিপুরের নাগা বিদ্রোহীরা এই ষড়যন্ত্রের অংশ। এটা আশ্চর্য যে বাংলাদেশ যেখানে তাদের মাটিতে ভারত বিরোধী কোনো শক্তিকে মাথাচাড়া দিতে দেয় না, অতীতে তাই দেখা গেছে। কিন্তু ভারত  এক্ষেত্রে  নিশ্চেষ্ট এবং অকার্যকর।

আমার মনে পড়ে তখনকার কথা যখন বাংলাদেশ পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলো। নয়াদিল্লি ঢাকার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য সেসময় পাঁচ বছর মেয়াদী একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল। পুরো অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য ওই পরিকল্পনাটি বেশ ভালো ছিল। কিন্তু নয়াদিল্লি এখন অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে।

বৃহৎ দৃষ্টিকোন থেকে নয়াদিল্লিকে এই দুর্ণামের ভাগ নিতে হবে। কারণ নয়াদিল্লি ঢাকার সঙ্গে সংযোগ রাখতে ব্যর্থ হয়েছে।

এই ব্যর্থ অভ্যুত্থান চেষ্টা শুধুমাত্র সতর্কতাই নয় বরং নয়াদিল্লি সরকারের জন্য এটা একটা সুযোগও বটে বাংলাদেশের জন্য কিছু করে দেখানোর। যাতে শেখ হাসিনা সরকার বুঝতে পারে ভারত সরকার বাংলাদেশ এবং এর জনগোষ্ঠীর পাশে আছে। পাশাপাশি বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কও ভালো করে ফেলতে হবে ভারতকে।

অন্য এক ঘটনায় বাংলাদেশ ভারত সীমান্তে ভারতীয় সেনাদের হাতে এক বাংলাদেশি লাঞ্ছিত হয়। টেলিভিশন চ্যানেলগুলো সম্প্রতি হয়ে যাওয়া এই ঘটনাটি তুলে ধরে। সেখানে দেখানো হয় ভুলবশত একজন বাংলাদেশি সীমান্ত অতিক্রম করায় ভারতীয় পুলিশ কিভাবে তাকে নির্যাতন করছে। এ সকল বিষয় নিয়েও এগিয়ে আসা উচিত এখনই ভারত সরকারের।’

Thursday, January 26, 2012

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে ফেব্রুয়ারিতে চুক্তি

মহাশূণ্যে দেশের প্রথম স্যাটেলাইট ‘বঙ্গবন্ধু-১’ উৎক্ষেপণের জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান স্পেস পার্টনারশিপ ইন্টারন্যাশনালের (এসপিআই) সঙ্গে ফেব্রুয়ারিতে চুক্তি করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন(বিটিআরসি)।

এরই মধ্যে সাতটি প্রতিষ্ঠানের মধ্য থেকে এসপিআইকে নির্বাচিত করা হয়েছে। বিষয়টি এখন মন্ত্রণালয় থেকে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে যাবে।

এসপিআইকে পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার ক্রয় সংক্রান্ত কমিটিতে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এসব প্রক্রিয়া শেষ হলে আগামী মাসেই এ সংক্রান্ত চুক্তি হবে।

বিটিআরসির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল জিয়া আহমেদ (অব.) বাংলানিউজকে বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসেই এ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষর করা সম্ভব।

দেশের স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেলসমূহ, টেলিফোন, রেডিওগুলো বিদেশি স্যাটেলাইট ভাড়ায় ব্যবহার করে। এতে প্রতি বছর ভাড়াবাবদ বাংলাদেশকে ১১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার গুনতে হয়। নিজস্ব স্যাটেলাইট চালু করতে পারলে দেশে শুধু বৈদেশিক মূদ্রা সাশ্রয়ই করবে না, সেই সঙ্গে অব্যবহৃত অংশ নেপাল, ভুটান, মিয়ানমারের মতো দেশে ভাড়া দিয়ে প্রচুর অর্থ আয় করা যাবে।

বিটিআরসি সূত্রে জানা গেছে, চুক্তি স্বাক্ষরের পর তিন থেকে সাড়ে তিন বছরের মধ্যে স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণের জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠানটি কাঠামো তৈরি, গ্রাউন্ড স্টেশন ব্যবস্থাপনা, বাজার মূল্যায়ন, স্যাটেলাইট বাজারজাতকরণ এবং স্থানীয় বিশেষজ্ঞদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি সব প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করবে।

প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে তিন হাজার কোটি টাকা। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এসপিআইকে দিতে হবে প্রায় ৯০ কোটি টাকা।

বিটিআরসি এরই মধ্যে ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন (আইটিইউ) কাছে কক্ষপথের ১০২ ডিগ্রি পূর্বে স্লট চেয়েছে। তবে বিটিআরসির এই স্লটে আপত্তি জানিয়েছে ১৮টি দেশ।

পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তির পরপরই এসপিআই এসব দেশের সঙ্গে আলোচনায় বসবে।

বিটিআরসির এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে জানান, ১০২ ডিগ্রি স্লটটি সবচেয়ে উপযুক্ত। এজন্য এসপিআইকে দেনদরবার করে আমাদের অনুকূলে সিদ্ধান্ত নিয়ে আসতে হবে।

বিটিআরসি আবেদন আহ্বান করলে প্রায় ৩৩টি প্রতিষ্ঠান এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট (ইওআই) জমা দেয়।

এর মধ্যে সাতটি প্রতিষ্ঠানকে চূড়ান্ত কার্যাদেশ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের জন্য বাছাই করা হয়। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স ও ইন্দোনেশিয়া থেকে সাতটি প্রতিষ্ঠান দর প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিল।

আর্থিক ও প্রযুক্তিগত প্রস্তাব যাচাইয়ের পর পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের এসপিআইকে নির্বাচিত করা হয়।

বিটিআরসি’র বিশেষজ্ঞদের মতে, হাওড়-বাওর, পাহাড় এবং সিলেট ও চট্টগ্রামের দ্বীপগুলোসহ দেশের সব জেলা ও উপজেলায় এখন পর্যন্ত সাবমেরিন ক্যাবল নেটওয়ার্ক পর্যাপ্ত নয়। তাই স্যাটেলাইট প্রযুক্তি চালু করা খুবই জরুরি। 


পদ্মা সেতু : কানাডার তদন্ত রিপোর্ট পেয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বিশ্বব্যাংক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হলে সরকার তাদের তহবিল নেবে না। আর বিশ্বব্যাংক বলেছে, দুর্নীতি প্রমাণের জন্য তারা কানাডার পুলিশের তদন্তের অপেক্ষায় আছে। তদন্ত রিপোর্ট পেলে তবেই পদ্মা সেতুতে অর্থায়নের সিদ্ধান্ত তারা নেবে।

এদিকে আজ ২৭ জানুয়ারি শেষ হয়ে যাচ্ছে পদ্মা সেতুর জন্য দেওয়া বিশ্বব্যাংকের ঋণের কার্যকারিতা। এর মেয়াদ বাড়ানোর জন্য ইতিমধ্যে আবেদন করে রেখেছে সরকার। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্রে জানা গেছে, ওয়াশিংটন ঋণের মেয়াদ বাড়াতে সম্মত হয়েছে। এ-সংক্রান্ত চিঠিও পাঠানো হয়েছে।

ঋণের মেয়াদ বাড়ানো হলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের (আইডিইবি) ১৯তম জাতীয় সম্মেলন ও ৩৫তম কাউন্সিল অধিবেশনের পদ্মা সেতু নিয়ে আবারও কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে আমরা মিথ্যা অভিযোগে মোড়ানো কোনো তহবিল গ্রহণ করতে পারি না।’ শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘এই বিশাল প্রকল্পের ব্যাপারে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পরপরই সরকার তা তদন্তের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) অনুরোধ করে। কিন্তু দুদক এখনো এই প্রকল্পে কোনো প্রকার অনিয়ম খুঁজে পায়নি।’

সূত্র জানায়, দুদকের তদন্ত এখনো শেষ না হলেও সরকারি সংবাদ সংস্থা গত সপ্তাহে এ-সংক্রান্ত একটি সংবাদ পরিবেশন করেছে। ওই সংবাদে বলা হয়েছে, দুদক পদ্মা সেতু নিয়ে কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতি খুঁজে পায়নি। এমনকি দুর্নীতির জন্য অভিযুক্ত সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের পারিবারিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ‘সাকো’রও কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। এরপর অবশ্য দুদক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান তাঁদের তদন্ত শেষ হয়নি বলে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন।

বিশ্বব্যাংকের বক্তব্য: বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর অ্যালেন গোল্ডস্টেইন গতকাল পদ্মা সেতুর সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে একটি লিখিত বক্তব্য দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে এই বক্তব্য দেওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘কানাডার আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বর্তমানে পদ্মা সেতুর দুর্নীতি ও জালিয়াতি নিয়ে তদন্ত পরিচালনা করছে। এ অবস্থায় ১২০ কোটি ডলার বিনিয়োগ এগিয়ে নেওয়া হবে কি না, সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কানাডার ওই তদন্ত প্রতিবেদনের জন্য বিশ্বব্যাংকের অপেক্ষা করার প্রয়োজন রয়েছে।’

অ্যালেন এই তদন্তকাজ দ্রুত করার জন্য বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনকে কানাডা সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, বিশ্বব্যাংকও এ নিয়ে তদন্ত করছে। এসব তদন্তে দুর্নীতি ও জালিয়াতির জন্য দোষী প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করা হবে।

পদ্মা সেতু প্রকল্প নিয়ে দুই ধরনের দুর্নীতি ও জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে তদারকে প্রাক-নির্বাচনী তালিকায় থাকা কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান এসএনসি-লাভালিন গ্রুপের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। অন্যতম অভিযোগ হচ্ছে এসএনসি-লাভালিনকে পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরামর্শক হিসেবে কাজ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে বাংলাদেশের একাধিক কর্মকর্তা কোম্পানিটির কাছে কমিশন চান। পরামর্শক হিসেবে কাজ পাওয়ার পর এই কাজের বিনিময়ে যে অর্থ পাওয়া যাবে, তা থেকে একটি অংশই কমিশন হিসেবে চাওয়া হয়। এ বিষয়ে কোম্পানি সম্মত হলে উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতাও হয়। এ নিয়েই কানাডার পুলিশ তদন্ত করছে।

এর বাইরে বিশ্বব্যাংক তাদের নিজস্ব যে তদন্ত প্রতিবেদন সরকারকে দিয়েছে, তাতে বলা আছে, পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিভিন্ন কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য ঘুষ বা কমিশন চেয়েছেন সৈয়দ আবুল হোসেনের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান সাকো ইন্টারন্যাশনালের প্রতিনিধিরা। সৈয়দ আবুল হোসেনের নাম ব্যবহার করে অর্থ চাওয়া হয়েছে। কমিশন দিলে কাজ পেতে যোগাযোগমন্ত্রী নিজেই সহায়তা করবেন বলেও আশ্বাস দেওয়া হয়।

এ অবস্থায় গত বছরের অক্টোবরে পদ্মা সেতুতে ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত স্থগিত করে দিয়েছিল প্রধান দাতা বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এবং জাপানের ঋণদান সংস্থা জাইকা। এই অভিযোগ ওঠার পর যোগাযোগমন্ত্রী পদে রদবদলও করা হয়।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এসএনসি-লাভালিনকে কালো তালিকাভুক্ত করে অন্যদের মধ্য থেকে পরামর্শক নিয়োগের দরপত্র চূড়ান্ত করার জন্য বিশ্বব্যাংককে লিখিত প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তবে বিশ্বব্যাংক এই প্রস্তাব গ্রহণ করেনি। এ কারণেই বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর গতকাল কেবল তদন্ত শেষ হলেই কালো তালিকাভুক্ত করার কথা আবারও বলেছেন।

এর ফলে সামগ্রিকভাবে পদ্মা সেতু নিয়ে অনিশ্চয়তা এখনো রয়ে গেল। তবে ঋণের কার্যকারিতার মেয়াদ বাড়ানোর কারণে কিছুটা আশাবাদী হওয়ার সুযোগ আছে বলেও মনে করছেন ইআরডির কর্মকর্তারা। তবে সবকিছুই নির্ভর করছে কানাডার তদন্ত এবং এ বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর।