Tuesday, February 28, 2012

প্রতিবাদে সিলেটে মানববন্ধন : সারী নদীর উজানে বাঁধ দিয়ে ভারতের বিদ্যুেকন্দ্র আজ উদ্বোধন

সিলেট জেলার সারী নদীর উজানে মাইন্ড্রো লেসকা হাইড্রো ইলেক্ট্রিক ড্যাম নির্মাণ করে ১ম ইউনিট ৪২ মেঘাওয়াট বিদ্যুত্ উত্পাদনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে আজ। এরই প্রতিবাদে জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাটসহ সিলেটবাসী আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। গতকাল সকাল ১১টায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সারী নদী বাঁচাও আন্দোলন ও বাপা সিলেটের যৌথ উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। মানববন্ধনে উপস্থিত বক্তারা বিভিন্ন আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ভারত আন্তর্জাতিক নদী আইন লঙ্ঘন করে পেশীশক্তি ব্যবহার করে বাংলাদেশকে মরুভূমি করার লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন নদ-নদীর উত্সমুখে ড্যাম বা বাঁধ দিয়ে পানির গতিরোধ করে বিদ্যুত্ উত্পাদন করছে। এতেকরে বাংলাদেশের একটি ব্যাপক অঞ্চল মরুভূমিতে পরিণত হচ্ছে। যার ফলে কৃষি ও পরিবেশের ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়ছে। অন্যদিকে জীববৈচিত্র হারিয়ে যাচ্ছে এবং কিছু সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট এলাকায় মন্দা খরাসহ দুর্ভিক্ষের মতো ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।

বক্তারা আরও বলেন, সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার লালাখাল এলাকা দিয়ে সারী নদী ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। বাংলাদেশের সীমান্ত থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার উজানে ডাউকী চ্যুতির কাছে লেসকা মাইনথ্রু হাইড্রো ইলেক্ট্রিক বাঁধ দিয়ে ৩টি ইউনিটে ৪২ মেঘাওয়াট করে মোট ১২৬ মেঘাওয়াট বিদ্যুত্ উত্পাদনের কাজ ২০০২ সালে ভারতের তত্কালীন রাষ্টপতি ড. এপিজে আবদুল কালাম এই প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন এবং ২০১১ সালের নভেম্বর মাসে ১ম ইউনিট পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়। এ সংবাদ সিলেট তথা সংশ্লিষ্ট এলাকায় চাউর হলে এলাকাবাসী, বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন প্রতিবাদ করলেও বর্তমান বাংলাদেশ সরকার কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। আজ মাইন্ড্রো নামক স্থানে নির্মিত ড্যামের ওপর ১ম ইউনিটের বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুত্ উত্পাদনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন মেঘালয় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ড. মুকুল সাংমা। বক্তারা আরও বলেন, যদি শিগগিরই বাংলাদেশ সরকার বাঁধের ব্যাপারে ভারতের সঙ্গে সারী নদীর পানি হিস্যা আদায়ের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তাহলে সিলেটবাসীসহ দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে লংমার্চ, প্রতীকী অনশন, হরতাল, অবরোধ ও প্রতিবাদ সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

সারী নদী বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি আবদুল হাই আল-হাদির সভাপতিত্বে ও বাপা সিলেট জেলা সেক্রেটারি আবদুল করীম কিমের পরিচালনায় শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন সারী নদী বাঁচাও আন্দোলনের সিনিয়র সহ-সভাপতি সাংবাদিক মনজুর আহমদ। এতে বক্তব্য রাখেন বাপার সিলেটের সহ-সভাপতি ও সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট এমাদ উল্লাহ শহিদ, মাছরাঙ্গা টিভির সিলেট বিভাগীয় আঞ্চলিক প্রতিনিধি সাংবাদিক আল-আজাদ, কমরেড সিকন্দর আলী, শাবির সাবেক রেজিস্ট্রার ড. জামিল আহমেদ চৌধুরী, সাংবাদিক আবদুল মালেক জাকা, এনটিভির সিলেট বুরো চিফ ময়নুল হক বুলবুল, যুগান্তরের স্টাফ রিপোর্টার সংগ্রাম সিংহ, সাংবাদিক ইকরামুল করীম ইপু, সাংবাদিক ফয়েজ আহমদ, সারী নদী বাঁচাও আন্দোলনের সাংগঠনিক সম্পাদক সাংবাদিক দেলোয়ার হোসেন, মনিপুরী সমাজকল্যাণ সমিতির সভাপতি নির্মল কুমার সিংহ, গোয়াইনঘাট উন্নয়ন ফোরামের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, কানাইঘাট সচেতন নাগরিক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক আবদুর রহিম, গোয়াইনঘাট মানবকল্যাণ ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি নূর আহমদ, সারী নদী বাঁচাও আন্দোলনের সেক্রেটারি মাহবুবুল আলম, সদস্য আলী আকবর রাজন, বিনয় দেব, জয়নুল আবেদীন, আলীম উদ্দিন, মীর হোসেন, আবুল খয়ের, রাসেল আহমদ, শফি উল্লাহ মাসরুর, রিয়াজ উদ্দিন, দেলোয়ার হোসেন, মেহদী হাসান প্রমুখ।

 

বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে কালিমাময় অধ্যায়ে পরিণত হতে চলেছে বিপিএল

বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে কালিমা লেপে দিয়েছে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল। সোমবার রাতে বিপিএলে চেয়ারম্যান গাজী আশরাফ হোসেন লিপু প্রেস বক্সে এসে জানান,'বাই লজ ভুল ব্যাখায় বরিশালের সেমিতে খেলার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে বরিশাল নয়, চট্টগ্রাম সেমিতে খেলবে রাজশাহীর বিপক্ষে।'


তাহলে এই দুই দিন যাবত যা হচ্ছে এর ব্যাখ্যা কি? বিপিএল বলেছিল দল গুলো বাইল লজ বোঝে না। আর চট্টগ্রাম কিংস বলছে বিপিএল বাই লজের ধারা অমান্য করেছে।

সব ঠিক ছিল, কিন্তু রাতের অন্ধকারে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল সিদ্ধান্ত পাল্টে দেয়। সংবিধানের ২১-এর ৮ এর ২ ধারায়  নাকি আবারও ভুল ব্যাখা হয়েছে। তাই চট্টগ্রাম বাদ বরিশাল সেমিতে খেলবে। রাত ২টা পর এই সিদ্ধান্ত বিপিএল লিখিতভাবেই জানিয়ে দেয় চট্টগ্রাম কিংসের মালিকপক্ষকে। কিন্তু কোন ধারায় বিপিএল এটা করেছে? এর ব্যাখাটাই বা কী? চট্টগ্রাম কিংসের মালিক সামীর কাদের চৌধুরীর কোনো প্রশ্নের জবাব রাতে বিপিএলের কর্মকর্তারা দিতে পারেনি।

সেমিফাইনাল শুরুর দুই ঘণ্টা আগেও দর্শক জানতো চট্টগ্রাম খেলছে। সেটা ভেবেই মাঠে এসেছে চট্টগ্রামের দর্শক। কিন্তু বিপিএলে এসব কি হচ্ছে? এমন প্রশ্ন সাধারণ দর্শকদের।

সেমিতে অন্যায়ভাবে বরিশালকে টেনে তোলায় চট্টগ্রাম তা মেনে নিতে পারেনি। আর এ কারণেই বিপিএলের শেষ চারের লড়াইয়ে বাদপড়া দল চট্টগ্রাম কিংস ঘোষণা করেছে, চট্টগ্রাম বিপিএল কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালাবে।

মধ্যরাত থেকেই চট্টগ্রাম কিংসের কার্যক্রম শুরু হয়ে যায়। তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত নেয় এবং তা সকাল নাগাদ খবর মিডিয়াতে পৌঁছে দেয়।

বেলা সাড়ে ১১টায় রূপসী বাংলা হোটেলে সংবাদ সম্মেলন দলটির পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান এস কিউ গ্রুপের অন্যতম কর্ণধার সামির কাদের চৌধুরী ক্ষুব্ধ কণ্ঠে মামলা করার কথা জানালেন।

সামির কাদের চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন,''বাইলজ ভেঙ্গে আমাদের সেমিফাইনাল থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। ২১ এর ৮ এর দুই উপধারা ও এক উপধারা মিলিয়ে নিয়ম বানানো হয়েছে। কিন্তু এভাবে একেক উপধারা থেকে একেক অংশ নিয়ে নিয়ম বানানো যায় না। আমরা আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছি, এরই মধ্যে আদালতে আমাদের প্রতিনিধি গিয়েছেন।''

তিনি বলেন, ''ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্স চট্টগ্রাম কিংসের কাছে এক ম্যাচ হারলেও সে বিষয়ে কোনো কিছু উল্লেখ করা হয়নি। বরং দুই দলের সঙ্গে জেতার কারণে গ্ল্যাডিয়েটর্সকে সেমিফাইনালে তুলে দেয়া হয়েছে। পরে বরিশাল বার্নার্সের সঙ্গে আমাদের খেলা 'হেড টু হেড' হিসেব করে রান রেটে আমাদের বাদ দেয়া হয়েছে।''

সামীর কাদের চৌধুরীর দাবি, ''এটা বাইলজের পরিষ্কার লঙ্ঘন। আর সে কারণেই আইনি লড়াই।''

এক পর্যায়ে বিপিএলের অভ্যন্তরীণ গোপন বিষয় প্রকাশ্যে নিয়ে আসেন সামীর কাদের চৌধুরী। তিনি বলেন,''বিপিএলের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত বিপিএলের সবকিছুতেই জুয়ার বা বাজির ছায়া দেখতে পেয়েছি। আমি এ পর্যন্ত তিনবার স্পট ফিক্সিং বা ম্যাচ ছেড়ে দেয়ার প্রস্তাব পেয়েছি। প্রতিবারই আমি দুর্নীতি দমন ও নিরাপত্তা ইউনিটকে জানিয়েছি কিন্তু বিসিবির পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাইনি।''

তিনি বলেন, ''আসলে বিপিএল পুরোপুরি জুয়ার আসর হয়ে আছে। আমার সন্দেহ হচ্ছে সেই জুয়ার কারণেই বরিশাল বার্নার্সকে সেমিফাইনালে খেলানো হচ্ছে কী না।''

শোনো যাছে বিপিএলের সঙ্গে ৬ দলের আনুষ্ঠিক চুক্তি স্বাক্ষর এখনও নাকি হয়নি? এটা কি সত্য? যদি সত্য হয়ে থাকে তাহলে কি আপনি এই পরিস্থিতিতে বিপিএলের সঙ্গে চুক্তি করবেন? জবাবে সামীর কাদের চৌধুরী বলের,'অনেক টাকা বিনিয়োগ করে দলে গঠন করলেও এখনো বিসিবির সঙ্গে কোনো চুক্তি হয়নি। আমি আগ্রহই হারিয়ে ফেলেছি। এর আগে এনসিএলেও অনেক টাকা বিনিয়োগ করেছিলাম। সেখানেও অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়েছে। আর এবারের অঙ্কটা তো আরও বড়, সে কারণে ঝামেলাগুলোও আকারে আরও বড় হচ্ছে। আমরা টাকা ফেরত দিয়ে দিলে আমি সালাম দিয়ে চলে যাব। এবং চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে এই মুহূর্তে আমার আর কোনো আগ্রহ নেই।''

ম্যাচ পাতানো নিয়ে বিসিবি কিছু করছে না বলে অভিযোগ সামিরের। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন,''পাকিস্তানের যে সন্দেভাজন একজন নাগরিককে ধরা হয়েছে সেটা কিন্তু বিসিবির কৃতিত্ব নয়। চট্টগ্রাম কিংস তাকে ধরিয়ে দিয়েছে। কিন্তু তারপর থেকে ওই ব্যাপারে আমাদের আর কিছু জানানো হচ্ছে না।''

বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল আমাদের কোনো তথ্য জানায়নি পর্যন্ত। বিভিন্ন মাধ্যমে খবর পেয়ে বিসিবি কার্যালয়ে গেলে রাত দুইটা ১৯ মিনিটে আমাদের একটি চিঠি ধরিয়ে দিয়ে জানানো হয়, সেমিফাইনালে খেলছি না আমরা।

অথচ সেমিফাইনালে খেলার নিশ্চয়তা পেয়ে আমরা এরই মধ্যে ওমর আকমল ও ওয়াহাব রিয়াজকে নিয়ে এসেছি, এর দায় এখন কে নেবে?'

সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম কিংসের কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন ও ব্যবস্থাপক নাসির আহমেদ নাসুও উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক সুজন বলেন,'বিপিএল এখন পর্যন্ত আমাদের কোনো সুষ্ঠু উত্তর দিতে পারেন নি। যারা ঠিকভাবে টুর্নামেন্ট চালাতে পারেন না তাদের ওইসব পদে থাকার নৈতিক অধিকার আছে কী সে প্রশ্ন তোলাই অবান্তর নয়।''

চিটাগং কিংসের দলের অন্যতম কর্ণধার বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী।

চট্টগ্রামকে বাদ দিয়ে বরিশাল বার্নার্সকে সেমিফাইনালিস্ট ঘোষণা করে বিপিএল পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেই এই সংবাদ সম্মেলনকরা হয়।

চট্টগ্রামের সংবাদ সম্মেলনের সময় বরিশাল বাদে অন্য তিন সেমিফাইনালিস্ট দলের কর্মকর্তাদেরও সেখানে দেখা গেছে। ছিলেন ঢাকা গ্লাডিয়েটর্সের ব্যবস্থাপক কাজী শফিকুল হক হীরা, দুরন্ত রাজশাহীর ব্যবস্থাপক ফারুক আহমেদ, খুলনা রয়েল বেঙ্গলসের ব্যবস্থাপক জাহিদ রাজ্জাক মাসুম।

ঢাকা গ্লাডিয়েটর্সের টিম ম্যানেজার শফিকুল হক সাংবাদিকদের জানান, নিয়ম ভঙ্গ করে যদি চট্টগ্রাম কিংসকে বাদ দেয়া হয়, তবে তারা চট্টগ্রামের প্রতি তাদের সমর্থন থাকবে।

দুপুর ২টায় প্রথম সেমিফাইনালে দুরন্ত রাজশাহী মুখোমুখি হবে বরিশাল বার্নার্সের।

হীরার মতোই চট্টগ্রামের প্রতি সমর্থনের কথা জানিয়ে রাজশাহী দলের ব্যবস্থাপক ফারুক সাংবাদিকদের বলেছেন, তারা সেমিফাইনাল ম্যাচে অংশ নিচ্ছেন।

অন্যদিকে সর্বোশেষ তথ্য অনুয়ায়ী আদালত চট্টগ্রাম কিংসের সেমিফাইনাল স্থগিতাদেশের আবেদন গ্রহণ করেনি।