Sunday, March 25, 2012

টিপাই বাঁধের পক্ষে দিল্লিস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনারের সাফাই

ভারতের উত্তরপূর্বের মনিপুর ও মিজোরাম রাজ্যের সীমান্তের বরাক ও তুইপাই নদীর মুখে প্রস্তাবিত টিপাইমুখ প্রকল্প বাংলাদেশের জন্য উপকারই হবে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার তারিক আহমেদ করিম।

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ভারতের সংবাদমাধ্যমের জন্য রোববার পাঠানো একটি প্রবন্ধে হাইকমিশনার এ মন্তব্য করেছেন।

কলকাতার বহুল প্রচারিত বাংলা সংবাদপত্র ‘দৈনিক প্রয়াগ’র প্রধান প্রতিবেদক দীপন বন্দোপাধ্যায় হাইকমিশনারের প্রবন্ধটি সম্পর্কে রোববার সন্ধ্যায় বাংলানিউজকে জানান।

নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রেস মিনিস্টার এনামুল হক চৌধুরী হাইকমিশনারের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে একটি প্রবন্ধ লেখার বিষয়টি বাংলানিউজের কাছে নিশ্চিত করেন।

‘বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক : এগিয়ে যেতে আমার ভাবনা’ শীর্ষক শিরোনামে ওই প্রবন্ধটিতে হাইকমিশনার লিখেছেন, ‘টিপাইমুখ প্রকল্প আকস্মিভাবে (ক্যাটালিজম) কোনও ক্ষতি করবে না, এটা বাংলাদেশের উপকার করবে।’ 
 
নয়াদিল্লি থেকে প্রেস মিনিস্টার এনামুল বলেন, ‘রোববার সকালে আমি হাইকমিশনারের প্রবন্ধটি ভারতের সংবাদমাধ্যমে পাঠিয়েছি।’

টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার সিলেটে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে জনসভায় বলেছেন, ‘বাংলাদেশের কোনো ক্ষতি হলে টিপাইমুখে বাঁধ করতে দেওয়া হবে না।’

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পরদিনই নয়াদিল্লিস্থ বাংলাদেশের হাইকমিশনার বাঁধ নিয়ে এই মন্তব্যে ভারতের গণমাধ্যমগুলোতে ব্যাপক আগ্রহের জন্ম দিয়েছে।

আসামের বাংলা সংবাদপত্র দৈনিক সাময়িক প্রসঙ্গের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মনজুর আহমেদ বড়ভূঁইয়া রোববার টেলিফোনে বাংলানিউজের কাছে হাইকমিশনারের লেখা সম্পর্কে তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘এটা খুবই আগ্রহোদ্দীপক বিষয়, যে হাইকমিশনার বিষয়টি কিভাবে দেখছেন।’

মনজুর বলেন, ‘টিপাইমুখ বাঁধের বিরোধিতা শুধু বাংলাদেশ নয়, বরং আসামের বরাক উপত্যকার মানুষ এবং খোদ মনিপুর রাজ্যেও হচ্ছে।’

হাইকমিশনার যা লিখেছেন:

‘বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া রিলেশন: মাই ভিশন অব দ্য ওয়ে ফরওয়ার্ড’ শিরোনামের প্রবন্ধে তারিক আহমেদ করিম বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন।

টিপাইমুখ বাঁধ প্রসঙ্গে লিখেছেন, ‘অনেকেই টিপাইমুখ প্রকল্প নিয়ে বিরোধিতা করছেন, কিন্তু আমি মনে করি এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে আকস্মিকভাবে কোনো ক্ষতি হবে না, বরং এই প্রকল্প থেকে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ পেতে পারে।’

তিনি আরো লেখেন, ‘টিপাইমুখ হবে একটি জলবিদ্যুৎ বাঁধ, যেখানে একটি নির্দিষ্ট মাপ পর্যন্ত পানি জমা করা হবে এবং পরে সেখান থেকে পানি বেরিয়ে আসবে যা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে।’

বাঁধ প্রসঙ্গে বিরোধিতাকারীদের বিরোধিতা করে বাংলাদেশের হাইকমিশনার বলেন, ‘বরাক নদীসহ কোনো নদী দিয়েই পানি অন্যদিকে সরিয়ে নেওয়া হবে না বা কোনো পানি প্রত্যাহারও করা হবে না।’
 
তিনি আরো বলেন, ‘শুধু জলবিদ্যুৎই উৎপাদনই নয়, এই প্রকল্প থেকে বন্যাও নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।’

তবে হাইকমিশনার এই প্রকল্পে যৌথ সমীক্ষার ওপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, ‘একটি যৌথ সমীক্ষা হলেই সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে এবং সবাইকে শান্ত করা যাবে।’