Tuesday, January 31, 2012

কামাল মজুমদারের যৌন লিপ্সা এবং সাংবাদিক নির্যাতনের আরও অজানা কাহিনী।

অতি সম্প্রতি মিরপুরের এমপি কামাল মজুমদারের সাংবাদিক নির্যাতনের সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ায় অনেকে জানতে পারছেন লোকটি কেমন নিকৃষ্ট। কিন্তু কেউ কি ভাবতে পারছেন তার নিজের একটি টেলিভিশন আছে সেখানকার সাংবাদিকরা কেমন আছে। কেউ কি সে খবর রাখেন! আপনারা কেউ ভাবতেও পারবেন না- কি অমানুষিক মানসিক নির্যাতন সে তার মোহনা টিভির সাংবাদিকদের দিয়ে এসেছে এবং আসছে। মোহনায় প্রায় প্রথম থেকে কাজ করেছেন এমন একজন নিউজ এডিটর এবং কয়েকজন সংবাদ কর্মীর কাছ থেকে শুনলাম সেসব কাহিনী।

বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর কামাল মজুমদার এই টিভির লাইসেন্স পান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নাকি তাকে ছোট ভাইয়ের মত দেখেন- কামাল মজুমদারের নিজের দাবি, যদিও বয়সে সে শেখ হাসিনার বড় হবে। সন্ত্রাসী কামাল মজুমদারের দাবি, "নেত্রী আমারে একদিন কইলো, এই কামাল তুই একটা টিভি নে।অনেক মিডিয়া আছে কিন্তু আমার নিজের মিডিয়া নাই। সেখানেই আমি সাদা কাগজে আবেদন করলাম। পেয়ে গেলাম টিভি। এটা আমার না শেখ হাসিনার টিভি।"

লাইসেন্স পাওয়ার পর কামাল মজুমদার যুদ্ধপরাধী সালাউদ্দিন কাদেরে সঙ্গে বৈঠক করেন এবং বন্ধ হয়ে যাওয়া সিএসবি টিভির অব্যহৃত মালামাল অল্প টাকায় কিনে নেন এবং নতুন লাইসেন্স পাওয়া টিভির কাতারে সবার আগে যাত্রা শুরু করেন।

প্রথমে রবীন সিদ্দিকী নামের এক লোক তার এখানে কাজ শুরু করেন, পরে তাকে এক রকম হুমিক দিয়ে বের করে দেন কামাল মজুমদার। তার অনেক টাকাও মেরে দেন কামাল মজুমদার। কথা ছিল তাকে ডিরেক্টর করবেন কিন্তু দেননি। বাইরের কয়েকজন ডিরেক্টর নিয়োগ দিয়ে তাদের টাকা নিয়ে তাদেরকেও একে একে বের করে দেন। এখন তাদেরকে টিভি ভবনে প্রবেশ করতে দেন না এবং টাকা চাইলে জানে মেরে ফেলার হুমকি দেন। ওরা অপেক্ষা করছে সুদিনের, কামালের পেছনে আবারো ডিম ডুকানোর কর্মসূচির দিনের অপেক্ষায়।

কামাল মজুমদারের এক জামাতা সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তা। সে হুমকি সাংবাদিক এবং ওইসব ডিরেক্টরদের দিয়ে সে বলে আসছে যে, কেউ যদি তার অকর্মের কথা ফাঁস করে দেয় তাহলে তার বিরুদ্ধে অন্য রকম ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদিও তার মেয়ের জামাতাকে কখনো ওই টিভির আশে পাশে দেখা যায়নি।

সাংবাদিক হিসেবে এক সময় ইত্তেফাকে কাজ করতেন আকরাম হোসেন। তাকে কামাল মজুমদার মোহনার সংবাদ বিভাগের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেন। তার সঙ্গে নিয়োগ পান সাদ বিন রাবী নামের আরেকজন সাংবাদিক, বর্তমানে আছেন ইসলামী টিভিতে। কামাল মজুমদার তাদের দুজনকে অনেক অনেক অপমান করে বিদায় করেন। শোনা যায়, সাদ বিন রাবীকে সে জুতা দিয়ে পেটান। বেচারা ইজ্জতের ভয়ে কাউকে সে অভিযোগ করতে পারেননি। আমিরুল ফয়সাল নামের আরেকজন সাংবাদিককেও সে পিটিয়ে বের করে দেন।

এরপর সেখানে সংবাদ বিভাগের প্রধান হিসেবে নিয়োগ পান মারুফ উদ-দৌলা নামের একজন সাংবাদিক, সঙ্গে দেলোয়ার হোসেন নামের আরেকজন। কামাল মজুমদার এদের মধ্যে মারুফকে অনেক অপমান করে বের করে দেন এবং তার পাওয়া টাকাও বুঝে দেন নি। এরপর সেখানে নিযোগ পান সেলিম খান এবং মুন্নী সাহার ভাই প্রনব সাহা। শোনা যাচ্ছে মুন্নী সাহার ভাই কামাল মজুমদারের বর্তমান প্রধান পরামর্শ দাতা।সংবাদের সঙ্গে এই লোকের কোনও সম্পর্ক না থাকলেও মুন্নীর দোহাইতে সে ছড়ি গোরাচ্ছে মোহনায়। তাকে বের করে দেওয়ার চাপ আসলে যারা তাকে বের করে দিতে চেয়েছে তাদেরকে উল্টা অন্যায়ভাবে বের করে দেয় কামাল মজুমদার--অনেক অপমান করে। কামাল মজুমদার অনেক সময় তার সাংবাদিকদের বলেন এটিএন বাংলার মুন্নী সাহা নাকি তার কেনা। প্রমাণ হিসেবে মোহনায় টানানো একটি ছবি দেখান-- যেখানে মুন্নীসাহাকে দেখা যাচ্ছে সন্ত্রাসী কামাল মজুমদারের কোনও এক অনুষ্ঠানে চামাচামী করতে।

অন্যদিকে মোহনা টিভির অনুষ্ঠান এবং প্রশাসন বিভাগেও একের পর বিশিশ্ট ব্যাক্তিরা কাজ করেছেন।অপমান নিয়ে বিদায় হয়েছেন। প্রথমে বিখ্যাত পরিচালক সৈয়দ সালাউদ্দিন জাকী তার সিইও হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু তাকে চরিত্র হরণ করে কামাল মজুমদার বিদায় করে দেন। সিইও হিসেবে এরপর আলী ইমাম যোগ দেন কয়েক মাস পর তাকেও অপমান করে বিদায় করে দেন কামাল মজুমদার, এমনকি দারোয়ানকে নির্দেশ দেন যাতে তিনি উপরে না যেতে পারেন। টিভি ব্যাক্তিত্ব আলী ইমাম অফিসে এসে এই পরিস্থিতির শিকার হয়ে না প্রবেশ করতে না পেরে চলে যান।তার প্রতিষ্ঠানে কয়েকদিনের জন্য সিইও হিসেবে কাজ করেন আরেক খ্যাতনাম সাংবাদিক আনিস আলমগীর। কিন্তু পরিস্থিতি আর পরিবেশ অনুকুলে না থাকায় তিনিও চলে যেতে বাধ্য হন।

সেখানে অনুষ্ঠান প্রধান হিসেবে হাসিনা আহমেদ সোমা, আহমেদ শরীফ, আরমানসহ অনেক বিশিষ্ট ব্যাক্তি কাজ করেন-- কিন্তু সবাইকে কামাল মজুমদার অত্যন্ত অপমানের সঙ্গে বিদায় করেন। অনেককে তাদের পাওনা বেতনও নিতে পারেননি। অনেকে সম্মানিত লোককে অসন্মান করতে করতে কামাল মজুমদার এমন বিশ্বাস পেয়েছেন যে, তার মনে হয়েছে যে, সাংবাদিকদের যা ইচ্ছা করা যায়। সে কারণে আরটিভির ৩ সাংবাদিককে সে পেটানোর সাহস পেয়েছে। অপর্ণা সিংহের মতো একজন নারী সাংবাদিকের গায়ে হাত দিয়েছে তার হাত মচকিয়ে দেয়েছে, টিভি মাইক্রোফোন ফেলে দিয়েছে। সে একবারও ভাবেনি, যাদের সে তার টিভিতে এনে অপমান করেছে তারা দ্বিতীয়বার অপমান না হতেই তার বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ করেনি প্রকাশ্যে। তাদের সবার মান সন্মান কামাল মজুমদারের মতো একজন সন্ত্রাসী, ছোট লোকের ছেলের চেয়ে বেশী।

কামাল মজুমদাদের একটা কৌশল ছিল মানুষকে চরিত্র হরণ করা। কিন্তু জানা গেছে এই লম্পটটের হাতে অতীতে যেমন অনেক নারী ধর্ষিত হয়েছে, পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে- গারমেন্টস কর্মী থেকে অভিনেত্রীরা তার হাতে ইজ্জত বাচাতে পারেনি, তেমনি এখনও সে অনেক নারী সাংবাদিকের চরিত্র হরণ করেছে বা করতে চেয়েছে। তার কারণে অনেক সংবাদ পাঠিকা সেখানে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। সংবাদ পাঠিকাদের শিডিউল সংবাদ বিভাগের লোকদের দেখার কথা থাকলেও সে নিজেই তা দেখতো এবং এখনো দেখে। সে সুযোগ নিত। কুপ্রস্তাব দিতো। দেয়। সকাল ৯টা থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত সে টিভি ভবনে থাকে। যাকে যখন তার রুমে ডেকে নেয়।

অত্যন্ত লজ্জার বিষয় যে, একজন সংবাদ পাঠিকা তরুনীকে কব্জা করতে গিয়ে জুতার বাড়ি খেয়েছে কামাল মজুমদার। অপমানের শিকার হয়ে কামাল মজুমদার মামলা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য তার বড় ছেলেকে বিয়ে দিয়ে সে সংবাদ পাঠিকাকে গত মে মাসে তার পত্র্রুবধু করে। তার ছেলে এই বিয়েতে রাজী না থাকলেও সে নিজেই প্রচার করে যে, ছেলে মেয়ে প্রেম করে বিয়ে করছে। আসলে ছেলে প্রেম করতো অন্যখানে- সে কারণে সে ড্রাগ নেওয়া শুরু করে। তার ওই গুণধর পুত্র দেশে এক লোককে হত্যা করে অনেক দিন বিদেশে পালিয়ে থাকলেও শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এলে দেশে ফিরে আসে।

মনিপুর স্কুলের কাহিনী পুরোটাই সত্য। ওই স্কুলকে কামাল মজুমদার তার নিজের সম্পত্তি মনে করছেন। সেখানকার হেড মাস্টার তার চামচা এবং মোহনায় তৃতীয় শ্রেণীর একটি টক শো করে ফরহাদ নামের ওই ব্যক্তি। বিষয়টি আসলে পরসম্পরের পিট চুলকানি। চোরে চোরে সহযোগিতা। অবৈধভাবে টাকা ভাগাভাগি, ভর্তি বাণিজ্য। কামাল মজুমদার সর্বশেষ যে কথাটি বলে-- তার বিরুদ্ধে মণিপুর স্কুল নিয়ে একটা কুচক্রি মহল ষডযন্ত্র করছে। ওরা জামাতি- মণিপুর স্কুলের ৭০ ভাগ শিক্ষক জামাতি। নিজেকে রক্ষা করার জন্য এই হারামি জামাতকে দোষারোপ করে "জামাতি ষড়যন্ত্র" বিষয়টিকে ভোতা করে দিতে চাচ্ছে।

আজ জানলাম, কামাল মজুমদার-এর মার পিট বাইরে নয়, ঘরেও বিস্তর। সে তার বউকে প্যান্টের বেল্ট দিয়ে নিয়মিত পিটে। অকথ্য গালাগালি করে। তার এই আচরণ বনানীনে তার আশে-পাশের বাড়ির সবাই জানে। ইদানিং নাকি হাওয়া একটু উল্টে যাচ্ছে। তার বউ উল্টা তাকে পিটায়। সে কারণে প্রায় সারা দিন সে ঘরের বাইরে কাটায়--অন্যদের সঙ্গে ঘেউ ঘেউ, খেট খেট করে।

অজানা কাহিনীর শেষ নেই-------এসব সন্ত্রাসী, কুখ্যাতরা আর কতদিন জন সেবার নামে জনগণের ঘাড়ে উঠে থাকবেন আল্লাহ জানে!

[বি: দ্র: এই পোষ্ট নিয়ে কারো সন্দেহ হলে, কোনো গোয়েন্দার গোয়েন্দা গিরি করতে হলে সত্যতা জানার জন্য যাদেরকে কামাল মজুমদার অপমান করে বিদায় দিয়েছেন তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। সোর্স থাকলে যারা এখনো কাজ করছে তাদের সঙ্গেও কথা বলতে পারেন কিন্তু আমি নিশ্চিত, প্রাণ ভয়ে তারা কেউ কথা বলতে নাও পারে।]